আমার ওয়েবসাইটে আসার জন্য ধন্যবাদ
time travel story
পার্ট-২
রাজ চোখ খুলে দেখল সে একটা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তাটি তার কাছে চেনা মনে হল। সে এদিকে-সেদিকে একটু হেঁটে স্থানটা চেনার চেষ্টা করতে লাগলো। আরে! এটা তো আমাদের পুরনো বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা। আমি এই রাস্তায় অনেকবার এসেছি কিন্তু আজ এ রাস্তা টা অচেনা মনে হচ্ছে। কেননা ২৬ বছর আগে সবকিছু অন্য রকম ছিল। কোন কিছুই বর্তমানের মতো নেই।
আপনি কি কাউকে খুঁজছেন? একটা অল্প বয়সী ছেলে পেছন থেকে বলে উঠলো। পিছনে ফিরে দেখল একটা ১৭-১৮ বছর বয়সী ছেলে দাড়িয়ে আছে। তার মুখটা খুব চেনা মনে হচ্ছে তার কাছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলোতে খুব ভালো করেই বোঝা যাচ্ছে তার মুখটা। খুব ভালো করে দেখার চেষ্টা করল তার মুখটা।
দুচোখে অশ্রুতে ভরে উঠলো। আব্বু!
আবেগাপ্লুত হয়ে ১৮ বছর বয়সে বাবাকে জড়িয়ে ধরল।
ফারাজ এক ধাক্কায় রাজকে সরিয়ে দিয়ে বলল, কি করছেন আপনি?
রাজ কোনো মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
রাজঃ আব্বু, আমার নাম রাজ। আমি তোমার ছেলে। আমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছি।
ফারাজঃ তুমি আমার ছেলে? কি বাজে কথা বলছ।
রাজঃ হ্যাঁ আব্বু, আমি তোমার ছেলে। একটা বাজে কথা নয় সত্যি কথা।
ফারাজঃ তোমার বয়স কত?
রাজঃ ২২ বছর।
ফারাজঃ আমার বয়স ১৮ বছর। তুমি আমার থেকে ৪ বছরের বড়।
রাজঃ হ্যাঁ, কেন না এখন থেকে আরও ৪ বছর পরে আমার জন্ম হবে।
ফারাজঃ তুমি ৪ বছর পরে জন্মগ্রহণ করবে, তাহলে এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছ কি করে?
রাজঃ বললাম না আমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছি।
ফারাজ এবার বিরক্ত হয়ে আর কোনো কথা না বলে বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করল।
রাজও পিছু পিছু যেতে শুরু করল। কিছুদূর যাওয়ার পর ফারাজ পিছনে ফিরে তাকায় ছেলেটি তার পিছনে আসছে নাকি সেটা দেখার জন্য। তার পিছনে রাজকে আসতে দেখে একটু ভয় পেয়ে গেল।
রাত হয়েগেছে। আশেপাশে কোন মানুষ নেই। অন্যান্য দিন এই সময় রাস্তায় অনেক মানুষ থাকে, কিন্তু আজ নেই। তাই সে বাড়ির উদ্দেশ্যে দৌড় দিল।
এদিকে বাবার এমন কান্ড দেখে রাজ হাসতে শুরু করল। কিছুক্ষণের মধ্যে বাবাকে হারিয়ে ফেলল।
এই বাসায় রাজ আগেও এসেছে বাবার সাথে। যদিও রাস্তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে তারপরও চেনা যায়। তাই নিজের বাসা খুঁজে পেতে সমস্যা হলো না। তবে বাসার কিছুটা পরিবর্তন চোখে পড়ল। সে যখন এর আগে ভবিষ্যতে এখানে এসেছিল তখন বাসার দেয়ালের রং ছিল সাদা, কিন্তু এখন অতীতে এসে দেখা যাচ্ছে সবুজ রঙের। রাত আটটার সময়ে চারদিকটা কেমন নীরব হয়ে গেছে।
সে কলিংবেলে চাপ দিলো আর মনে মনে প্রার্থনা শুরু করল যেন বাবা এসে গেট খুলে।
কিন্তু সেটা হলো না দাদু এসে গেট খুলে দিল। মৃত দাদুকে এতটা ইয়ং দেখে আবেগ আপ্লত হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরল। দাদু তাকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিল।
দাদুঃ পাগল নাকি? গায়ের উপর পড়ছ কেন?
রাজঃ সরি দাদু মানে আঙ্কেল। আমি আপনার ছেলে ফারাজের কাছে এসেছি।
দাদুঃ তার সাথে কি কাজ?
রাজঃ আমি তার প্রাইভেট টিচার হতে চাই।
দাদুঃ ফারাজের প্রাইভেট টিচারের প্রয়োজন নেই। সে অনেক ইন্টেলিজেন্ট, তুমি আসতে পারো।
রাজঃ দাদু প্লিজ মানে আঙ্কেল, আমি জানি যে সে কতটা ইন্টেলিজেন্ট যেটা আপনিও জানেন না। কিন্তু আমি যদি সাথে থেকে ওকে পড়াই তাহলে সে আরো ইন্টেলিজেন্ট হয়ে যাবে। আর তাছাড়াও আমাকে বেতন দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই আপনার। শুধু থাকার জায়গা দিলেই হবে। আমি ইন্ডিয়া থেকে এসেছি এখানে আমার থাকার কোন জায়গা নেই।
দাদুঃ আচ্ছা তাহলে এই ব্যাপার। মেইন উদ্দেশ্য এখানে থাকা? গেট আউট। (গেট বন্ধ করে দিলেন)।
রাজঃ (চিৎকার করে) আঙ্কেল আমি পড়াশোনায় অনেক ভালো। আমার বাবা একজন প্রফেসর। ফারাজ আমাকে চিনে আমাকে। আর সে এখানে আসতে বলেছে আমাকে।
দাদুঃ (আবার গেট খুলে দিলেন) ফারাজ তোমাকে এখানে আসতে বলেছে?
রাজঃ হ্যাঁ আঙ্কেল।
দাদুঃ ঠিক আছে, ভেতরে এসো। (রাজ ভেতরে প্রবেশ করল) তোমার চেহারার সাথে ফারাজের চেহারার অনেক মিল আছে তাই তোমার উপর অন্য রকম একটা মায়া কাজ করছে। তাই ভেতরে আসতে দিয়েছি তা না হলে—-। যাইহোক, তুমি বলছিলে তোমার বাবা একজন প্রফেসর এটা কি সত্য?
রাজঃ হ্যাঁ আঙ্কেল।
দাদুঃ তোমার নাম কি?
রাজঃ আমার নাম রাজ। বাবা তার নিজের নামের সাথে মিলিয়ে আমার নাম রেখেছেন।
দাদুঃ কি নাম তোমার বাবার?
রাজঃ ফারাজ খান।
দাদুঃ কি? আমার ছেলের নামও তো ফারাজ খান।
রাজঃ হ্যাঁ আঙ্কেল আমি জানি। এই জন্যই তো আপনাকে বারবার দাদু ডেকে ফেলছি।
দাদুঃ যাই হোক, ফারাজ মাত্র গ্রুপ স্টাডি করে বাসায় ফিরেছে। এখন সে ফ্রেশ হয়ে ডিনার করবে এরপর পড়তে বসবে। তোমার কাজ হচ্ছে সে যতক্ষণ পড়াশোনা করবে তুমি ততক্ষণ ওর পাশে বসে থেকে ওকে সাহায্য করবে।
রাজঃ ওকে দাদু না না আঙ্কেল।
দাদুঃ বার বার দাদু বলা বন্ধ কর। আর হ্যাঁ ঘুমিয়ে পড়ো না যেন। মনে রাখবে ফারাজ যদি তোমাকে এখানে থাকার অনুমতি না দেয় তাহলে আমি তোমাকে এখানে রাখব না।
রাজঃ ঠিক আছে। (ফারাজের রুমের দিকে যেতে শুরু করল)।
দাদুঃ আমি তো একবারও বলিনি ওইটা ফারাজের রুম।
রাজঃ (একটু চিন্তা করে নিল কি বলা যায়) ফারাজ বলেছিল পূর্বদিকের রুম টা তার। তাই আইডিয়া করে
দাদুঃ ঠিক আছে যাও।
আপনার মতামত, পরামর্শ, অভিযোগ অথবা কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।
পার্ট-১ পড়তে ক্লিক করুন ব্যাক টু ২০১৫(পার্ট- ১)